কেউ ভালো নেই, সবাই ভালো থাকার অভিনয় করে মাত্র
এক আজিব শহর কলকাতা, গ্রাম থেকে রুজি রোজগারের জন্য অনেকেই আসে এই শহরের বুকে, কেউ বাবা মার টাকায় ঘুরে বেড়ায়, কেউবা লোকের টাকায় ফুর্তি করে, কেউবা নিজে রোজগার করে ভালো থাকার তাগিদে। পরিশ্রম কমবেশি সকলেই করে শেষে কেউ প্রতিষ্ঠিত হয় আবার কেউ হয়না বিকল্প পথ খুঁজে নিতে হয় তাকে। নিজ লক্ষ্যে অবিচল থেকে সাফল্য হয়ত পাওয়া যায়। যাইহোক, চা খেতে বেরোলাম বাইরে, বিয়ের মরশুম, পাশেই একটা হলে বিয়ে হচ্ছে। একদল বরযাত্রীর সাথে এগিয়ে আসছে বর। সামনে ব্যান্ড রয়েছে সঙ্গে রয়েছে গোপাল ভাড় ও জোকারের বেশে দুজন ব্যক্তি, আশেপাশের বাচ্চাদের সঙ্গে মেতে থাকছে, মূলত মানুষ হাসানোই এদের কাজ। জোকারের বেশে যে আছে তাকে দেখে শাহরুখ অভিনীত ডাংকি সিনেমার কথা মনে পড়ে গেল। সিনেমায় দেখেছিলাম একদল যুবক নিজেদের গরিবী দুর করার জন্য লন্ডন যাবার স্বপ্ন দেখে, বিদেশে গিয়ে অনেক টাকা রোজগার করবে, বাড়ির সবার স্বপ্ন পূরণ করবে, সাথে নিজেও ফাইন্যান্সিয়াল ফ্রিডম পাবে। ছোটবেলায় গ্রামে একটা কথা শুনতাম, বিদেশ গেলেই টাকা আর টাকা। আসলেই কি তাই?
ডাংকি সিনেমায় বাল্লি চরিত্রে ছিলেন অনিল গ্রোভার, যে হাজার স্বপ্ন নিয়ে বিদেশ গিয়েছিল অনেক টাকা ইনকাম করবে সেই আশায়। কিন্তু পরে দেখা গেল কি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে তার দিন কেটেছে। স্ট্যাচু হয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে থেকে কিছু টাকা রোজগার করত যার বেশিরভাগটাই বাড়িতে পাঠিয়ে দিত। নামি দামি গাড়ি প্রপার্টির সামনে দাড়িয়ে ছবি তুলে বাড়িতে পাঠাত যাতে বাড়ির লোক বুঝতে পারে সে ভালো আছে। সেই বাল্লির সাথে যখন তার বন্ধুরা লন্ডনে প্রথম দেখা করে তখন সে কেঁদে ফেলেছিল, অবাক হয়েছিল তার বন্ধুরাও।
আজ বিয়ে বাড়ির এই জোকারকে দেখে বাল্লির কথা মনে পড়ে গেল। পরিবারকে ভালো রাখার জন্য মানুষ কিনা করতে পারে। যদিও হয়ত ওটা তার পেশা, তবুও কেন জানি আমার এই কথাগুলো মাথায় ঘুরছে বারবার। তাই লিখে ফেললাম দুলাইন। আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুক, ভালো থাকবেন সবাই। শুভ রাত্রি।
জুয়েল।
২১-০১-২০২৪ | ২১:৪২
উত্তর পঞ্চান্ন গ্রাম বাসস্ট্যান্ড
কলকা
তা ১০০
No comments: