ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।


ক্যারিয়ারের বিষয়ে সবথেকে বড়ো সিদ্ধান্ত গুলো নেওয়ার আগে অবশ্যই ভাবা উচিত, অনেকবার ভাবা উচিত। হুট হাট করে নেওয়া সিদ্ধান্ত গুলো অবশ্যই ভুল হয়। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু, (সবথেকে পুরনো ও কাছের বন্ধু) ওর ক্যারিয়ার নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেবে তাই আমাকে কল করে ডাকে সেই মত গেলাম নিদৃষ্ট স্থানে, গিয়ে শুনলাম একটা হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে, একটা প্ল্যাটফর্ম ছোট থেক বড়ো করেছে অনেক ঝড় বয়ে গেছে এই প্ল্যাটফর্মটা বড়ো করতে, ওর সব থেকে খারাপ এবং কঠিন দিনগুলোতে যতটা পেরেছি পাশে থাকার চেষ্টা করেছি, যেটা সবার ক্ষেত্রেই করি। তবে হ্যা আমি কারোরই ভালো দিনের সঙ্গী হতে চাইনা বা হইনা। আর ভালো দিন এলে খারাপ দিনের সঙ্গীদের মানুষ সেভাবে মনেও রাখে না। যাইহোক, আজ সামান্য কিছু নেগলিজিবল কারণের জন্য বন্ধু তার জায়গা থেকে সরে আসবে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ব্যাপারটা শুনলাম কি হচ্ছে না হচ্ছে বা আগে কি হয়েছে।
যা বুঝলাম সমস্যা জটিল এবং সমাধান করতে সময় লাগবে। সব শুনে বললাম ঠিক আছে তোর কাজ করতে ভালো লাগছে না করিস না, দরকার হলে টোটালি ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরে আয়। বললো এইতো ঘুরে এলাম কদিন আছে ওখান থেকে। পার্ক সার্কাসের 4 নম্বর ব্রিজের কাছে এক হায়দ্রাবাদি চায়ের দোকানে চা নিয়েছি বৃষ্টিও হচ্ছে তখন। অনেক বোঝালাম কেন সহ্য করে থাকবে ওই প্লাটফর্মে সেটাও বোঝালাম। আর যদি একান্তই ছেড়ে যেতে হয় সেটা আজ নয় এক সপ্তাহ বা আরো দুদিন ভেবে তারপর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে রিকোয়েস্ট করলাম। একটু পরেই আমি চাঁদনীচকে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম যাবার সময় বলে গেলাম আমি আবার আসছি ঘুরে এখন কিছু করে বসিস না।

বিকেল 5টা নাগাদ ঢুকলাম ওদের অফিসে, দেখলাম যারা কাজ করে এবং ওর আরেক পার্টনার সবাই আছে অফিসে।
একটু পরে আবার বন্ধু বললো সত্যিই ছেড়ে দিচ্ছি। তখন কিছু কথা আবারও বললাম, তুই এটা ছাড়ার পর কাল থেকে কি করবি ভেবেছিস? তুই তো কারো কর্মচারী হিসেবে কোথাও কাজ করতে পারবি না। মানে আমার সেই বন্ধু কারো কোম্পানি বা কারো কাজের লোক হয়ে কোথাও টিকতে পারবে না। তাহলে নিজের এমন একটা প্ল্যাটফর্ম থাকতে সামান্য কিছু ব্যাপারের জন্য কেন ছাড়বে? বললো যা হবে দেখা যাবে এখানে থাকতে আর ভালো লাগছে না।
আমি বললাম তোর কাছে প্রপার প্ল্যান নেই আজ এটা ছাড়ার পর কাল কি করবি, তাহলে কেন এসব হটকারী সিদ্ধান্ত নিস?

যাইহোক, বন্ধুর একটা খারাপ গুন আছে ওর কাছে অবশ্যই সেটা ভালো সেটা হলো ও কারো কথা শোনে না, কারোর না। বিশেষ করে ক্যারিয়ারের বিষয়ে কারো পরামর্শর ভ্যালু ওর কাছে শূন্য। একটু পরেই শুনলাম মিটিং আছে এবং সেই মিটিংয়ে ছেড়েও দিল সব কিছু। রেগে রেগে অভিনন্দন জানালাম।

বেশ কয়েকদিন হলো বন্ধুর সেই প্ল্যাটফর্ম ছাড়া। এখনও বন্ধু জানেনা কি করবে কি করলে ভালো হবে কাল গিয়েছিলাম আবার ওর কাছে, কাল বলে না রোজই যায়। আমাকে বললো বল কি করলে ভালো হয় কি করব?
আমি বললাম সরি ভাই, তোর ক্যারিয়ারের ব্যাপারে আমি কিছুই পরামর্শ দিতে পারব না। কারণ আল্টিমেট তুই কিছুই শুনিস না বা গুরুত্ব দিসনা।
তোর ক্যারিয়ার তোকেই ডিসিশন নিতে হবে। তবে এটুকুই বলব কিছু করার আগে অবশ্যই তার ফল কি হবে ভেবে করা উচিত।
বন্ধুর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। আগামীর পথচলা সহজ হয়ে উঠুক। শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।

২৫-০৭-২০২৩
১২:১৮
কলকাতা।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post